কুষ্টিয়া সংবাদদাতা:কুষ্টিয়া সদরের নগর মহম্মদপুর গ্রামের মধ্যে অবৈধ নিউ মিসফালাহ্ কনজুমার প্রোডাক্টস তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। ৬ জন ব্যক্তির মালিকানায় গ্রামের মধ্যে উক্ত কারখানাটি তৈরি করে ৪৬টি পণ্য উৎপাদন করে তা বাজারজাতকরণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে উক্ত কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে দেখা যায় বিভিন্ন ভেজাল পণ্য সামগ্রী দিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী ও শিশু খাদ্য খাদ্য সামগ্রী তৈরি করছেন। এ বিষয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের জিএম টিপু সুলতানের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমরা ৬ জন ব্যক্তি মিলে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি বর্তমানে আমাদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তিনি ঢাকাতে অবস্থান করছেন। তার কাছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও অগ্নিনির্বাপণ অফিসের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেন নাই। তিনি প্রতিবেদককে এটাও বলেন আমরা ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছি পারলে আমাদের বিরুদ্ধে লিখতে পারেন।
মিসফালাহ্ কনজ্যুমার প্রোডাক্টটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে যা কিনা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ও ঝুঁকিপূর্ণ। উক্ত প্রতিষ্ঠান কি বিসিক শিল্পনগরীর কোন কাগজপত্র নেই, নেই কোন অনুমোদন, তারা নির্বিঘ্নে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ৪৬টি পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে নগর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বললে, তারা জানান তাদের উৎপাদিত পণ্য আমাদের এলাকায় বিক্রি করেন না তারা বিক্রি করেন অন্যত্র জেলায় এবং যে সকল পণ্য তৈরি করা হচ্ছে তা দেশের নামিদামি কোম্পানির মোড়কে ভরে উৎপাদন করছে। আমরা সরেজমিনে তাই দেখা গেছে যে, ডেইরি মিল্ক, লাভ ক্যান্ডি, লিচু ক্যান্ডি, ম্যাংগো ক্যান্ডি, ব্রাইট টয়লেট ক্লিনার, ব্রাইট ভিক্সোল, ব্রাইট ফ্লোর ক্লিনার, ব্রাইট পাওয়ার তারপিন, ব্রাইট গ্লাস ক্লিনার স্প্রে, সেনসোডাইন পেস্ট, সেনসোডাইন ব্রাশ, কোলগেট টুথপেস্ট, ঝরার বি টুথব্রাশ, মামা ভাগিনা সরিষার তেল, টেনিস বল, রেসিং কার, অরেঞ্জ ক্যান্ডি, ঝাল টক মিষ্টি ক্যান্ডি, তেতুল পালস, ক্যান্ডি প্যাকেট, ব্রাইট ডিটারজেন্ট, নিউ মিসফালা কয়েল সহ একাধিক পণ্য সামগ্রী নামিদামি কোম্পানির ব্রান্ড ব্যবহার করে তাদের নাম দিয়ে উৎপাদন করে যাচ্ছেন বীরদর্পে।
সরেজমিনে দেখা গেছে তাদের অধিকাংশ পণ্যসমগ্রী দেশী ও বিদেশী পণ্যের মোড়কে তৈরি করা হচ্ছে নিচে নাম দেয়া হচ্ছে নিউ মিসফালাহ্ কনজুমার প্রোডাক্ট। উক্ত কারখানায় কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে কথা বললে তারা জানান পুরান ঢাকা থেকে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির পরিত্যক্ত ডাস্ট ক্রয় করে এনে ভেজাল কেমিক্যাল মিশ্রিত করে তা মোড়কজাতকরণ করা হচ্ছে।
উক্ত প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে বিসিক শিল্পনগরী কুষ্টিয়া ও ঢাকা প্রধান কার্যালয় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই নামের কোন প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়াতে নেই অথচ নামে মাত্র জিয়ারখী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ব্যবসায়ী ছাড়পত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্টিত করে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর ও অগ্নিনির্বাপণ অফিসের কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বারংবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেন নাই । ফলে উক্ত কর্মকর্তাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা যায় নাই। তবে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন এর মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমার তেমনটি জানা নেই আপনি আমার মেসেঞ্জারে ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিন আমি জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিচ্ছি।
এ বিষয়ে উক্ত মিসফালাহ্ কনজ্যুমার প্রোডাক্টস এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সুধীমহল। উক্ত সুধীমহলরা এটাও বলেন, এভাবে ভেজাল পণ্য উৎপাদন করে তা শিশুদের মাঝে বিক্রি করে অর্থ লুটে নিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মানবদেহের কতটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা সাধারণ জনগণ বুঝতে পারছে না, আমরা চাই অচিরেই জেলা প্রশাসক মহোদয় উক্ত প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
রিপোর্ট: চাঁদ আলী।